ব্যুরো ঢাকাঃ ট্রুং মাই লান। ভিয়েতনামের অন্যতম শীর্ষ ধনী। তবে তার উত্থান গল্পটি অনেকটাই সিনেমার কাহিনীর সঙ্গে মিলে যায়। এক সময় মায়ের সঙ্গে হো চি মিন শহরের প্রাচীন মার্কেটে প্রসাধনী বিক্রি করতেন। ট্রুং মাই লান। ভিয়েতনামের অন্যতম শীর্ষ ধনী। তবে তার উত্থান গল্পটি অনেকটাই সিনেমার কাহিনীর সঙ্গে মিলে যায়। এক সময় মায়ের সঙ্গে হো চি মিন শহরের প্রাচীন মার্কেটে প্রসাধনী বিক্রি করতেন। ধীরে ধীরে তার ছোট ব্যবসা বড় করেন। ১৯৮৬ সালে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টি অর্থনৈতিক সংস্কার চালু করলে ট্রুং মাই লান শুরু করেন ভূমি ও সম্পত্তি কেনাবেচা। নব্বইয়ের দশকে বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁর একটি বড় অংশের মালিক বনে যান।

চীনা ভিয়েতনামি পরিবারে জন্ম নেয়া ট্রুং মাই লানের ভাগ্যের পরিবর্তন হতে শুরু করে হংকংয়ের বিনিয়োগকারী এরিক চুয়ের সঙ্গে পরিচয়ের পর। ১৯৯২ সালে তারা বিয়েও করেন। একই বছর ট্রুং চালু করেন আবাসন কোম্পানি ভ্যান থিন ফ্যাথ হোল্ডিংস। ২০১১ সালের মধ্যে হয়ে ওঠেন হো চি মিন সিটির প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। সে বছরই তিনি সায়গন কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন। এ প্রক্রিয়ার সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিল খোদ দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকেই ট্রুং মাই লানের নাটকীয় উত্থানের শুরু। এক সময় হয়ে ওঠেন দেশটির শীর্ষ ধনীদের একজন। তবে ট্রুং ছিলেন অনেকটাই প্রচারবিমুখ।

এক দশকের বেশি সময় পর ভিয়েতনামের ফুলেফেঁপে ওঠা আবাসন খাতের বুদ্বুদ ধসে গেলে আর্থিক খাতে নানা প্রতারণার ঘটনা বেরিয়ে আসতে শুরু করে। কভিড-১৯ মহামারীর সময় ট্রুং মাই লানের ব্যবসায়িক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে ২০২২ সালের অক্টোবরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাসার বেজমেন্টে মেলে নগদ ৪ বিলিয়ন ডলার।

অর্থ আত্মসাতের ক্ষেত্রে ট্রুং মাই লান প্রচলিত ও জনপ্রিয় পথেই হেঁটেছেন। ভিয়েতনামের আইন অনুসারে, একজন ব্যক্তি ব্যাংকের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা অর্জন করতে পারেন। আইনানুসারে, কাগজে-কলমে ট্রুংও ছিলেন সায়গন কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক। তবে পরোক্ষভাবে বেনামি কোম্পানির মাধ্যমে তিনি ব্যাংকটির ৯০ শতাংশের বেশি শেয়ার হাতিয়ে নিয়েছিলেন। ২০১১ সাল থেকে ১১ বছর ধরে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ ও নগদ হিসেবে তিনি ও তার সহযোগীরা ব্যাংকটি থেকে ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে অবশ্য ১ হাজার ২০০ কোটি বা ১২ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের ঘটনা প্রমাণ করতে পেরেছেন আইনজীবীরা।

অভিযোগ রয়েছে, অর্থ আত্মসাতের প্রক্রিয়া মসৃণ করতে ট্রুং মাই লান ব্যাংক কর্মকর্তা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তাদের বড় অংকের ঘুস দিয়েছিলেন। তার বেআইনি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার বিনিময়ে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন সাবেক প্রধান পরিদর্শক ৫০ লাখ ডলার ঘুস নিয়েছিলেন বলে স্বীকারও করেন।

ট্রুং মাই লানের অর্থ আত্মসাতের বিচার প্রক্রিয়াও ছিল বেশ বড় আকারের কর্মযজ্ঞ। হো চিন মিন সিটির পিপলস কোর্টে এ বিচারের সময় ৮৫ জন বিবাদী, ২ হাজার ৭০০ সাক্ষী, রাষ্ট্রীয় ১০ আইন কর্মকর্তা ও ২০০ আইনজীবী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ জায়গা দিতে ১০৪টি বাক্সের দরকার হয়েছিল এবং এর ওজন ছিল ছয় টন। বিচারে সব বিবাদীই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ট্রুং মাই লান পেয়েছেন সর্বোচ্চ শাস্তি, মৃত্যুদণ্ড। তার স্বামীর ৯ বছর ও ভাতিজির ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।

গত অক্টোবরে পৃথক একটি মামলায় ট্রুং মাই লানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রতারণা, অর্থ পাচার ও অবৈধভাবে সীমান্তের বাইরে অর্থ নেয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এক্ষেত্রে ২৭ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার তছরুপ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ট্রুং মাই লান আপিল করেছিলেন, যা গত ৩ ডিসেম্বর খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তবে ভিয়েতনামের আইন অনুসারে, আত্মসাৎ করা অর্থের তিন-চতুর্থাংশ ফেরত দিলে সাজা মওকুফের সুযোগ রয়েছে। আদালত তার রায়ে জানিয়েছিলেন, ট্রুং মাই লানের মৃত্যুদণ্ড যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হবে, যদি তিনি ৯ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেন। তবে বিদ্যমান অবস্থায় তিনি তার সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার অর্থ সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।

ভিয়েতনামের এ ঘটনাটি বাংলাদেশের জন্যও শিক্ষণীয় বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক খাত সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য ড. জাহিদ হোসেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘দেশের বড় দুর্নীতিবাজদের অনেকেই পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ ধরাও পড়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে এখানে মামলা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দুর্নীতির মামলা না, হত্যা মামলা। তাড়াহুড়ো করে যথাযথ প্রস্তুতি না নিয়ে এ মামলাগুলো করা হয়েছে। এগুলো শেষ পর্যন্ত আদালতে টিকবে কিনা সন্দেহ আছে। যে মামলাগুলো করা হয়েছে সেগুলোর ভিত্তিতে এটি আশা করা কঠিন যে এতে কোনো সুফল বয়ে আনবে। পরবর্তী সময়ে যদি দুর্নীতিভিত্তিক মামলা করা হয়, যেখানে তথ্য-উপাত্ত আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে, তাহলে হয়তো আমরা কিছু আশা করতে পারি। ভিয়েতনাম যা করেছে আমরা যদি এ ধরনের কোনো কিছু করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পারব না।’

বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকেও বিগত সময়ে ভিয়েতনামের মডেলে অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে। দেশের ব্যাংক খাত থেকে ২ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে বলে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছিলেন। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গোয়েন্দা সংস্থা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তায় ব্যাংক দখল, বেনামি কোম্পানির মাধ্যমে শেয়ার কিনে ব্যাংকের পরিচালক হওয়া এবং একক গ্রাহক ঋণসীমার ফাঁদ এড়াতে বেনামি কোম্পানির মাধ্যমে একই গ্রুপের অনুকূলে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। পাচার হওয়া এসব অর্থে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও কানাডার মতো দেশে সম্পত্তি কেনার প্রমাণও পাওয়া গেছে। অবশ্য এসব পাচারকারীর সিংহভাগই আইনের আওতার বাইরে রয়ে গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ও ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অর্থ আত্মসাতের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়াটা আইনের দিক থেকে সমীচীন নয়। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য শাস্তি দেয়াটা কাম্য। তা না হলে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে তার চেয়ে বেশি জরিমানা করতে হবে। জরিমানার অর্থ আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেলে থাকতে হবে। পাশাপাশি সরকার পরিবর্তন হলেও শাস্তি মওকুফ করা যাবে না এমন বিধানও রাখতে হবে। এখানে রাষ্ট্র থেকে অনুকম্পা করার কোনো সুযোগ নেই।’

আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে অর্থ পাচার রোধের আইনটি বেশ পুরনো। তাছাড়া এতে সাজার পরিমাণও কম। ব্যাংক থেকে ঋণের নামে অর্থ নিয়ে সেটি আত্মসাৎ করা হলে কী হবে, এ-সংক্রান্ত কোনো আইন নেই। তাছাড়া আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিলে সাজা কমানোর সুযোগ রয়েছে কিনা সেটি আইনে সুনির্দিষ্ট করে বলা নেই। সব মিলিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের ক্ষেত্রে আইনি কাঠামোতে যথেষ্ট ফাঁক-ফোকর রয়ে গেছে, যার কারণে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগেও ঘাটতি ছিল।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসানুল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ভিয়েতনামের মতো শাস্তি আমাদের এখানে সম্ভব না, কারণ আমাদের দেশে ওইরকম আইন নেই। এখানে অর্থ আত্মসাতের জন্য, পাচারের জন্য মাত্র সাত বছরের জেল, যাবজ্জীবনও না। ভিয়েতনামের অর্থনীতি খুব বেশি পুরনো না। আমাদের চোখের সামনে ওরা ধনী হয়েছে। এত কড়া আইন করার জন্যই ওদের এত প্রবৃদ্ধি। দেশের প্রবৃদ্ধির জন্য ওরা অনেক কঠিন আইন করেছে, যার মধ্যে অন্যতম একটি আইনে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। আমাদের দেশে টাকা আত্মসাৎ, চুরি, ব্যাংক লোপাট, দেশের টাকা বাইরে পাচার—এগুলোর জন্য তেমন কোনো শাস্তির বিধান নেই। মানি লন্ডারিংয়ের জন্য সাত বছরের কারাদণ্ড, যেটা পার করে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন অপরাধী, সুতরাং মৃত্যুদণ্ডের ভয় নেই। বাংলাদেশের বড়লোকরা আজকে যে রকম অবস্থায় পড়েছে, আগে এমন অবস্থায় কখনো পড়েনি। ফলে সাত বছরের শাস্তির বিধানও কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। মানি লন্ডারিং আইন আমাদের দেশে যেভাবে আছে, সেটা খুব অস্বচ্ছ। এটায় কী করলে যে মানি লন্ডারিং হয়, সেটা বোঝাই দুরূহ। দুদক যেভাবে মামলাগুলো করে সেটার অর্থবহ কিছু না।’

ব্যাংক থেকে ঋণের নামে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করলে কী হবে, এ বিষয়ক কোনো আইন নেই জানিয়ে এ আইনজীবী বলেন, ‘ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে যখন টাকা ফেরত দেয় না, তখন উকিলরা পেনাল কোডে বা দণ্ডবিধি আইনে ৪০৬ ও ৪২০-এ মামলা করি। ৪০৬ হচ্ছে যদি আপনার কাছে বিশ্বাস করে কেউ কোনো অর্থ রাখে বা অন্য দামি কোনো কিছু রাখে, সেটা নিজে ব্যবহারের জন্য যদি আত্মীকরণ করেন, তখন সেটা অপরাধ বলে গণ্য হয়। আর ৪২০ হচ্ছে, যখন বিশ্বাস করে আপনাকে একটা কিছু দেয়, সেটা যে কাজে ব্যবহার করার কথা তা না করে যখন অন্য কাজে ব্যবহার করেন, এক্ষেত্রে ঠিক টাকা নিয়ে টাকা ফেরত না দেয়ার বিষয়টা সেভাবে আসে না। ব্যাংকের থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দিলে কোনো ক্রিমিন্যাল অফেন্স নেই। ব্যাংক থেকে টাকা লোপাটের ক্ষেত্রে শুধু অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করা ছাড়া সেই অর্থে সরাসরি প্রয়োগযোগ্য কোনো আইন নেই।’

ব্যাংকাররাও মনে করছেন ব্যাংকের অর্থ লুট ও পাচারের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে এগুলো ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে অর্থ আত্মসাতের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে আত্মসাৎ করা অর্থ উত্তরাধিকারীদের ভোগের সুযোগ থাকবে, যেটি কাম্য নয়। এক্ষেত্রে আত্মসাৎকারীদেরই সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থ আত্মসাৎ করে ধরা পড়লে চরমভাবে অপদস্থ হতে হবে এমন ভয় তৈরি করতে হবে। তাহলে এ প্রবণতা কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘একজন মানুষ যদি টাকা চুরি করে, সেই টাকা পাচার করে নিয়ে চলে যায়। এদিকে যদি আমি টাকাটা ফেরত না পাই, সে কারণে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে—এটা আমি ঠিক পছন্দ করি না। আমার কথা হলো তাকে হেয় করতে হবে। ধনী অপরাধীকে দিনদুপুরে উন্মুক্ত স্থানে জনসম্মুখে নিয়ে সামাজিকভাবে অপরাধ উপলব্ধির ব্যবস্থা করতে হবে। অপরাধীদের বুঝতে দিতে হবে যে দরিদ্র মানুষের টাকা সে চুরি করেছে, দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেছে। ফাঁসি হয়ে গেল, শুটিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করানো হলো—দোষী সাব্যস্ত হলে এগুলো সম্ভব কিন্তু এটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে না। আইনকে যদি পরিবর্তন করে একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখানো যায় তাহলেই হয়তো ভয়ের সঞ্চার হবে। ভয় পাওয়াতে হবে। মেরে ফেললে তো মরেই গেল, সেক্ষেত্রে লোপাট করা অর্থ বংশধররা উপভোগ করবে। এটাও যেন না করতে পারে, এমনভাবে প্রয়োজনে আইনটাকে বদলাতে হবে। যাতে করে সব রকম সম্মানহানি হয়, যেন একঘরে হয়ে যায়।’

অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম প্রতিযোগী দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণে অবশ্য বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে দেশটি। বিশেষ করে চীন থেকে কারখানা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অন্যতম সুবিধাভোগী ভিয়েতনাম। তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও দেশটি উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরিতে এগিয়ে। ব্যবসা সহজীকরণ সূচকেও বেশ উপরের দিকে রয়েছে ভিয়েতনাম। দুর্নীতি থাকলেও কঠোর আইন ও সরকারের দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের কারণে দেশটি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ভিয়েতনাম অনেক কিছু করতে পারে। বাংলাদেশ একটা উদার রাজনৈতিক গণতন্ত্রের দেশ। এখানে বিভিন্ন ধরনের আইন বিদ্যমান। ব্যাংকিং কোম্পানি ও অন্যান্য আইন আছে। আইন অনুযায়ী যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তার শাস্তি হবে। সেটা অর্থ বা অন্য যেকোনো কিছু নিয়ে হোক। ভিয়েতনামের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা মনে হয় ঠিক হবে না। আমাদের পক্ষে ওইরকম কিছু করা সম্ভব হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য না। আমাদের এখানে দৃষ্টান্তমূলকের ক্ষেত্রে যাবতীয় সম্পদ জব্দ, যদি বেশি লুটপাট করে জেলে পাঠানো—এ ধরনের ব্যবস্থা হতে পারে।’

ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে যে টাকাগুলো লুটপাট হয়েছে সেগুলো মূলত সরকারের সহযোগিতায় হয়েছে। সরকার বলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবই জানত। কোন ব্যাংক, কত টাকা, কে নিচ্ছে—কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অগোচরে কিছুই হয়নি। অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার জন্য লুটপাটের সুযোগ পেয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম গ্রহণ করা উচিত। যারা টাকা নিয়েছে তারা ডাইভারশন করেছে। ব্যাংকের ম্যানেজাররা জানত, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

ফেসবুক মন্তব্য


মতামত জানান :

 
 
 

শিরোনাম :

বগুড়ায় রানার প্লাজা থেকে তালা কাটার যন্ত্রসহ যুবক আটক রাজারহাটে খড়ের পিকআপে মিললো ৩৫কেজি গাঁজা,গ্রেফতার-১ নাট্য সমিতির সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের ৫র্ম দিনে মঞ্চায়িত হলো সংগীতানুষ্ঠান ফরিদপুরে চোরাই গরুসহ দুই চোর আটক সাদ পন্থীদের নিষিদ্ধের দাবীতে ঈদগাঁওতে বিক্ষোভ  পঞ্চগড় দ্বিতীয় দফায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও পরবীক্ষণ কমিটির সাথে তথ্য কমিশনারে সাথে মতবিনিময় সভা নবাবগঞ্জে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ডোমারে ইপিল গাছ থেকে গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের খসড়া তালিকা প্রকাশ বিএনপি আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে পঞ্চগড়ে আদালতে জনবল তোপের মুখে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত নদীতে নিখোঁজ দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার শেরপুরে  বিএনপির মনোভাব কি বদলাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের পাকিস্তান থেকে আমদানি বেড়েছে ২৭%,কমেছে ভারত থেকে আদমদীঘিতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ, প্রশাসন নীরব তেঁতুলিয়ায় শীতবস্ত্র উপহার দিলেন আল খায়ের ফাউন্ডেশনের মালয়েশিয়ায় বড়দিন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবির জ্যাকেট-আইডি কার্ড না দেখিয়ে আসামি ধরছে না বাংলাদেশে ছাত্রদের নতুন দল আসছে, টার্গেট কি ক্ষমতা? পঞ্চগড় তেঁতুলিয়ায় ৯ কোটি টাকার মাদকসহ যুবক আটক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে ফাঁসি দেওয়া হবে-হামিদুর রহমান আযাদ ট্রাক-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ নিহত-২ ফরিদপুরে বিদেশি পিস্তলসহ দুই সন্ত্রাসী আটক কবিতঃ চির স্বরণীয় কবি নজরুল-লেখক সৈয়দ হারুনুর রশীদ ঠাকুরগাঁও এর বালিয়াডাঙ্গীতে শ্যালকের হাতে দুলাভাই খুন। পাকিস্তান থেকে আলু-পেঁয়াজ ও শিল্পের কাঁচামাল জাহাজ এসেছে চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে পারে
Translate Here »