মিরু হাসান, ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের পানি নিষ্কাশনের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্টের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দিয়েছেন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিষয়টি নিরসন চেয়ে গত চার দিন আগে সান্তাহার পৌর প্রশাসক বরাবর স্থানীয় সচেতন মহলের গণস্বাক্ষরিক একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর পাইপাস তিনমাথা মোড়ে হা-মীম পেট্রোল পাম্প ঘেষে এবং উপর পোঁওতা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পূর্ব পাশে পানি নিষ্কাশনের দুইটি কালভার্ট রয়েছে। বহু দিন ধরে এসব কালভার্টের ড্রেন দিয়ে পৌর এলাকার হাউজিং কলোনী ও পাশর্বর্তী ইকড়কুড়ি, ধামকুড়ি, বশিপুর এবং অপরটি দিয়ে উপর পোঁওতা ও ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের পানি নিস্কাশন হয়ে আসছিল।
গত কয়েকদিন ধরে রাতের আধাঁরে এস্ককাভেটর মেশিন দিয়ে হা-মীম পেট্রোল পাম্পের সত্বাধীকারি ইস্তিয়াক আহম্মেদ এবং উপর পৌঁওতার রায়হান ও সুমন নামের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাটি ভরাট করে কালভার্টের মুখ বন্ধের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। ইতিমধ্যে ভরাট কাজ ৮০ ভাগ সম্পূর্ণ হয়েছে। পুরোটা হলে এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার শীকার হবে। ডুবে যাবে ফসলী মাঠ ও বসত বাড়ি। স্থানিয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন, মামুনুর রশিদ, এমদাদুল, নিজামুল আমিন বৃত্তি, খোকন জানান, কালভার্টের জায়গা দখলে নিতে রাতের আধাঁরে ইচ্ছে মতো ভরাট করে পুরো মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা পানি নিষ্কাসনের কোনো পথই রাখেনি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
সান্তাহার পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, মানুষের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে এলাকাবাসী পৌর প্রশাসকের কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। হা-মীম পেট্রোল পাম্পের সত্বাধীকারি ইস্তিয়াক আহম্মেদ বলেন, এই কালভার্ট দিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে পানি আসে না। তাছাড়া এ বছর কালভার্টটি বন্ধ করা হয়নি। আমার জায়গার বাহিরে কারো জায়গা দখল করিনি।
একই অবস্থা পৌর শহরের উপর পোঁওতা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পূর্ব পাশের কালভার্টটিরও । ওই গ্রামের আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের ফসলী মাঠের পানি নিষ্কাশন হয় এই কালভার্ট দিয়ে। গত কয়েকদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই কালভার্টটির মুখের দুইপাশে মাটি ভরাট করে পুরো মুখ বন্ধ করে দিয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দা রায়হান ও সুমন নামের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি।
এ বিষয়ে সান্তাহার পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর কালভার্টের মুখ থেকে মাটি সরিয়ে ফেলার জন্য পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলীকে একটি নোটিশ করতে বলা হয়েছে। ভরাটকারিরা কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।