ফেসবুক পরিচয় পাল্টালো চলে গেল মেটার অধীনে। জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পরিচয় পাল্টে ফেলল ফেসবুক। গতকাল বৃহস্পতিবার ফেসবুক সংস্থার বার্ষিক সম্মেলন ‘কানেক্ট কনফারেন্স’-এ নতুন নাম ঘোষণা করেন মার্ক জাকারবার্গ। গোটা বিশ্বে বহুমাত্রিক প্রভাব বিস্তারকারী এই টেক কোম্পানি নতুন নাম নিয়েছে মেটা। জাকারবার্গ জানান, ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রাধান্য দিতেই নতুন এই ব্র্যান্ড নাম নিয়েছেন।ফেসবুকের নাম বদল হতে পারে, এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। কিন্তু কী নাম রাখা হবে, তা নিয়ে কখনোই প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি জাকারবার্গের সংস্থা।
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি বা অধিবাস্তব নিয়ে কাজ করার কথা বলা হচ্ছিল। তখন কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও ফেসবুকের নাম যে ‘মেটা’ হতে চলেছে সেটা কেউ আঁচ করতে পারেননি। এই বদলের ফলে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ওকুলাস, হোয়াটসঅ্যাপের মতো অন্যান্য সেবার নাম অবশ্য বদলে যাবে না। ‘মেটা’ হবে মূলত এর প্যারেন্ট কোম্পানি। ছয় বছর আগে গুগল যেভাবে মাদার কোম্পানি অ্যালফাবেট তৈরি করেছিল, ফেসবুকের নতুন ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটলেন জাকারবার্গ।
২০০৪ সালে ফেসবুক ইনকরপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন জাকারবার্গ। মূলত এটাই এখন মেটা ইনকরপোরেশন নামে পরিচিতি পাবে। ফেসবুক ২০১২ সালে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করার অ্যাপ ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয়। এরপর ২০১৪ সালে ভয়েস, বার্তা ও ছবি আদান-প্রদানের অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় সংস্থাটি।
১৭ বছর আগে হার্ভার্ড কলেজে নিজের নাম পেয়েছিল ফেসবুক। কলেজের ছাত্রদের দেওয়া ফেসবুক ডিরেক্টরিজ থেকেই হয় ওই নামকরণ। আর জাকারবার্গ বর্তমানে যে মেটাভার্স তৈরির কথা বলছেন, সেই শব্দ প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল তিন দশক আগে এক কাল্পনিক উপন্যাসে। তবে সম্প্রতি সেই ধারণা আবারও আমেরিকার সিলিকন ভ্যালিতে নতুন করে উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে।
নতুন পদক্ষেপের ব্যাপারে জাকারবার্গ বলেন, আমরা এখন যা কিছু করছি, নতুন এই নাম তার প্রতিফলন নয়। এখনো পর্যন্ত এটি একটি পণ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা একটি মেটাভার্স কোম্পানি গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
মেটাভার্সসহ ফেসবুকের নতুন এই ব্র্যান্ডিংয়ের আলোচনা এমন একটি সময়ে এসে জোরালো হয়েছে যখন ফেসবুক নিজেই নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর চাপের মুখে রয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির আরেক সেবা ইনস্টাগ্রামে শিশুদের জন্য আলাদা সংস্করণের ধারণাটিও ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে।