গবেষণা মুলকঃ ইঞ্জিনিয়ার চৌঃ মোঃ হাসিনুর রহমানঃ নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ উত্তর অঞ্চলের বেশীর ভাগ নদী এখন মৃত প্রায়, পতিত জমিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। মাছে ভাতে বাংঙ্গালী এই কথাটি এখন পার্শ্ববর্তী দেশের কারণে হারানোর পথে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত অবৈধ ভাবে বাঁধ নির্মাণের করে আমাদের দেশকে মরূভূমি করণের যুদ্ধে নেমেছে। তারা মুখে বলছে আমরা এমন কিছু করবো না যা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতি হয়। আমরা বাংলাদেশের বন্ধু। অথচ তারা বর্ডারের নিকটবর্তী সুইচ গেট নির্মাণ করে পানি প্রবাহ বাঁধা দিচ্ছে, তাদের কথা আর কাজের মিল পাওয়া যাচ্ছে না। চুক্তি অনুযায়ী পানি বন্টন নীতিমালা তারা পরোয়া করেনা। আর বর্ষা মৌসুমে সুইচ গেট খুলে আমাদের বন্যা কবলিত করছে।
আমাদের সরকার তাদের কাছে নতজানু সভাবে কারণে তারা ফায়দা লুটে নিচ্ছে। যেহেতু শক্তির দিক দিয়ে আমরা পেড়ে উঠবো না। সবলের জয় আর দুর্বলের পরাজয় এটা চিরন্তন সত্য, সদ ইচ্ছা থাকলে আমাদের এই সমস্যা সমাধান আমরা নিজেরাই করতে পারি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। মাছে মাছে ভরিয়ে তুলতে পারি বাংলাদেশ। ভারতের বাঁধের কারণে বাংলাদেশের সকল নদী সহ দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের নদী গুলো মৃত প্রায়।
বাংলাদেশের নিকটতম হিমালয় হয়ে বয়ে আসা ভারতের মহানন্দ নদী হয়ে পঞ্চগড়ের তীরন্নই নদী, করোতোয়া নদী ও ঠাকুরগাঁও টাঙ্গন নদী হয়ে পদ্মা নদীতে মিলিত হয়েছে। এক সময় দেখেছি সারা বছর এসব নদী গুলো পানিতে পরিপূর্ন থাকতো মাছে মাছে ভরে থাকতো নদী। আমরা খালি হাতেই মৎস শিকার করতাম। দুঃখ জনক হলেও এ কথা সত্যি নদীর রেখা আছে শুধু পানি আর মাছ নেই। আজ হতে বিশ বছর আগেও নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত কিন্তু বর্তমানে সে সকল প্রজাতির মাছ আর চোখেই পড়েনা। শুধু বইয়ের পাতায় এদের সংরক্ষন করে রাখা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্মের জন্য দেশীয় মৎস বই / মিউজিয়াম করে চিনাতে হবে। তাই সরকারের মৎস ও পানি সম্পদ মন্ত্রালয় এই প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করে তুলতে পারে।
পরামর্শঃ উত্তর অঞ্চল দিনাজপুর,ঠাকুরগাও,পঞ্চগড়ের। যে সকল নদী গুলি আছে তা পূণরায় ৬ / ৭ ফুট ড্রেজিং করে ভারত ও বাংলাদেশ নোমেন্স ল্যান্ড ( ১৫০ ফুট ) ভারত যেখানে বাঁধ দিয়েছে সেখান হতে ২০০০ / ৩০০০ ফুট দুরত্বে প্রকল্প আকারে গভীর ডাক / পাম্প হাউজ করে খড়া মৌসুমে পাতাল থেকে পানি তুলে নদী গুলো পানি দ্বারা ভরে রাখা যায় তাহলে পানি সংকট অনেকাংশে লাঘব করা সমম্ভব। এ প্রকল্প শুধু ৩ মাস চালবে বাকি ৩ মাস বর্ষা মৌসুমে বন্ধ রেখে ৬ মাসের অবশিষ্ট্য সময় আমাদের নদীর পানি দিয়ে চালানো সম্ভব তাঁতে প্রকল্পের ব্যায় অনেক কম হবে।
আমরা যদি গভীর হতে পানি তুলতে পাড়ি তখন ভারতের বাঁধের ধরে রাখা পানির লেয়ার ক্রমানুয়ে আমাদের পানির লেয়ার সমান হয়ে যাবে। এ ছাড়া ১ কিঃমিঃ পরপর নদী লীজ দিয়ে মৎস চাষ করে দেশের মাছের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি প্রকল্পের আয়ের উৎস হতে পারে। বিঘা প্রতি কৃষককে জমিতে পানি সেচ দিতে খরচ ৮০০ শত থেকে ১০০০ টাকার প্রয়োজনে সে ক্ষেত্রে কৃষককে গড়ে ৫০০ টাকা বিঘা প্রতি খরচ ধার্য্য করা হয় তা হলে সেখান থেকে প্রকল্প ব্যায় কমানো সম্ভব।
সরকারী অনেক খাত আছে যা সারা বছর লোকসান গুনে সে রকম এটাও যদি লোকসান খাত হিসেবে ধরে বাস্তবায়ন করা হয় তা হলে হাজার হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহর পাশাপাশী দেশে মৎস চাহিদা পূরণ করে, ধান, গম, ছাড়া অন্য ফসল যেমন শাক-শ্বব্জীর উৎপাদন করে আত্মনিভরশীল দেশ গড়া সম্ভব। শুধু টকশো করে কোন ফায়দা হবে বলে আমি মনে করিনা।
তাই সরকার সহ দেশের অনেক বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান আছে যারা উক্ত প্রকল্পের সহায়ক হয়ে বাস্তবায়ন করে তাহলেই এ দেশ কৃষি সমৃদ্ধশীল দেশ হিসেবে গড়া সম্ভব। তাঁতে ভারতের কাছে হুজুর হুজুর করার প্রয়োজন হবে না। আমরা নিজেরাই আমাদের পানির সমস্যা সমাধান সক্ষম হতে পারি। অথবা বিদেশি অনেক দাতা দেশ আছে তাদের সাথে যোগযোগ করলে প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। বলে আমি মনে করি। আশা করি সরকার এ বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।