নাগরিক ভাবনা:আবু মহী উদ্দীনঃ ক’দিন আগে বঙ্গবন্ধু সড়কের উত্তর পাশ দিয়ে বেশ বড়ো ড্রেন হলো। এমনিতে বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রয়োজনের চেয়ে বেশী উঁচু, এর পর ড্রেন বানানো হয়েছে আরো উঁচু করে। এমনিতে রাস্তার উত্তর পাশে ঘোষপাড়া, সরকারপাড়া, ব্যক্তি মালিকানার বাড়ীঘর যাই হোক, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, পিটিআই, সেনিটারী কার্যালয়, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, আনসার ক্যাম্প, সড়ক ভবন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নেসকো, গণপূর্ত, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল সার্জন কার্যালয়, হাসপাতাল, সরকারি কর্মকর্তা কোয়াটার এসব এক লাইনে এবং এসব এলাকা রাস্তা এবং ড্রেন থেকে অনেক নিচুতে।
পানি যাওয়ার জন্য যতগুলো কালভার্ট এই রাস্তায় ছিল তার সবগুলো বন্ধ করা হয়েছে অনেক আগেই সরকারিভাবেই। উদাহরণ, ট্রাফিক অফিস আর ডিডি এগ্রিকালচার অফিসের এখানেতো কোন বেসরকারি স্থাপনা বা ব্যক্তিমালিকানাধীন ঘরবাড়ি নেই। তবে পানি যে এই ড্রেনে নামবেনা সেটা প্রায় গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়। প্রয়োজনীয় বৃষ্টি হলে এই সব এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ের ভবদহ হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। অলরেডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ তা হয়েছে। আবার সেনিটারী অফিস থেকে আমতলা পর্যন্ত ওয়াকওয়ে করে ড্রেনের উপরিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে , এই এলাকার ড্রেন কখনো পরিস্কার করা যাবেনা।
আর একটা বিষয় আমরা বুঝিনি তা হলো ক’দিন আগে এই বৃহৎ ড্রেন গুলো বানানো হলো তার পরে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং সড়ক ভবনের মূল গেট বানানো হলো। সড়ক ভবনের গেটে হয়তো অল্প স্বল্প ড্রেন ভাংচুর করে মেলানো যাবে কিন্তু আমাদের মনে হচ্ছে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় গেট চালু করলে অনেক কিছুই ভাংচুর করতে হবে। এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোড়া বিদ্যুতের একটা পোল। আর ক’দিন পরে যখন বিশাল বিশাল ট্রাকে করে বিনামূল্যের সরকারী বই পুস্তক আসবে তখন এই কাজটা করতে হবে। হয় ড্রেন ভাঙ্গতে হবে না হলে গেট ভেঙ্গে উঁচু করতে হবে। এ ছাড়া এই গেট ব্যবহার করা যাবেনা। প্রশ্ন হলো সমন্বয়হীনতার জবাব কে নেবে আর কে কাকে দিবে?
গেটটা আগের জায়গায় করলে সব রক্ষা হতো অথবা ড্রেন করার সময় ওদেরকে বলতে হতো, নুতন গেট কোথায় হবে, বললে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতো। যদি এরকম হয় যে নুতন কাজের নুতন বাজেট, বাজেট মানে সবাই বোঝে। সড়ক ভবনের গেটটার জন্যও একই কথা। আবার এদিকে স্কুলের প্রাচীরটা যা হচ্ছে, তাতে বাইরে থেকে প্রথম বারের মতো কেউ আসলে ভাবতেই পারে একেবারে শহরের মধ্যে জেলখানা? কিছুক্ষণ পর তার ধারণা পাল্টে মনে হতে পারে এটা নিশ্চয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অথবা মহিলা মাদরাসা। মেইন গেট না দেখা পর্যন্ত এই ধারণা হওয়া স্বাভাবিক।
স্কুলে ক্লাশ না হলে কিছু দেখা যাবেনা। স্কুলের সাথে প্রধান শিক্ষকের বাসা থকেলেও গত ৩০ বছরে এখানে কোন হেডমাষ্টার থাকেনি, ফলে স্কুল ছুটির পর বা ছুটির দিয়ে অভিভাবকহীন অবস্থায় থাকে। আর বাসাটা নষ্টতো হয়েছে এবং এই স্কুলের বিভিন্ন এলাকায় মাদকসেবীদের বিচরন নিয়ে দারুন অভিযোগ আছে। তাদের আর দেখা যাবেনা। এই বেঢপ প্রাচীরটা নিয়ে স্কুল এবং ঠাকুরগাঁও বাসীর রুচির উপর আঘাত আসতে বাধ্য। সরকারের শিক্ষা প্রকৌশলে এতো রুচিহীন প্রকৌশলী বা ডিজাইনারদের নিয়োগ করা হয়েছে যাতে আমরা অবাক না হয়ে পারছিনা। এরা কি আবার আবেদ আলীর পিএসসির প্রোডাক্ট কিনা, সে প্রশ্নও জোরদার হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক বা ম্যানেজিং কমিটির দ্বারা চলে বলে মনে করার কোন কারন নাই। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডিসি সাহেব।
ডিসি সাহেবের এনিয়ে কোন মাথাব্যথা আছে বলে সহজে প্রমান করা যাবেনা। তিনি নজর দিতে পারলে এই ঘটনাটা হয়তো না। অথবা তিনি হয়তো জানেনইনা যে স্কুলের গেট বা প্রাচীর হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটির একটি আধুনিক প্রাচীর থাকবে যার মাধ্যমে শহরবাসীর রুচির বহি:প্রকাশ ঘটবে। আর শহরের নের্তৃস্থানীয়দের কোন হেলদোল নাই। শুধু কি তাই, দক্ষিন পাশে রাস্তার ড্রেনের উচ্চতা মাঠের জন্য চমৎকার প্রাচীর এবং ওয়াকওয়েটার সৌন্দর্যই নষ্ট হয়েছে। আবার দক্ষিন পাশে গাছগুলোও লাগানোর কোন ছিড়ি নাই। এটা হলো শহরের এপ্রোচ রোড।
এই রাস্তার ডেকোরেশনের মাধ্যমে শহর পরিচালকদের রুচির বহি:প্রকাশ ঘটবে। এখানে গাছ লাগানোর সাধারন নীতিমালা মানলেসব কুল রক্ষা পেতো। উত্তর লাইন দিয়ে ছোট যে সেব গাছ ছোট হবে এবং ঝাকড়া ফুল হবে সেসব, মাঝখানে তারচেয়ে যে সেব গাছ মাঝারী আকারের হবে, আর শেষে যে সব গাছ বড় হবে সে সব লাগাতো হতো। সমস্যা হলো এটা যারা করেছে , তাদের মেধার কাছে আর কারো মেধার মুল্য বা স্বীকৃতি কোনটাই নাই।