সোহরাওয়ার্দী খোকন স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ ও উচ্চ লাফে দেশসেরা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের সজল।বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২৪ মে) শুরু হয় শেখ কামাল ৩৮তম জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা। প্রথম দিনেই বাজিমাত করে ঠাকুরগাঁওয়ের মো: সজল আহমেদ।
দীর্ঘ লাফ এবং উচ্চ লাফে স্বর্ণপদক পেয়েছে সে। উচ্চ লাফে তার উচ্চতা ছিল ১.৮০ মিটার এবং দীর্ঘ লাফে ৬.৩২ মিটার। এ ছাড়া শটপুটে ১০.৯৭ মিটারে তৃতীয় হয়েছে সজল।সজল ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের শিংপাড়া গ্রামের মো. রমজান আলীর ছেলে। সে সালান্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এর আগে ২০২৩ সালেও উচ্চ লাফে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক পায় সজল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সজল আহমেদ বলে, আমি ছোটবেলা থেকে আমার বড় ভাইকে অ্যাথলেটিকসে অংশগ্রহণ করতে দেখতাম। বিভিন্ন প্রকার দৌড় খেলাসহ দীর্ঘ লাফ খেলতেন। ভাইয়াকে দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। আমার খুব ভালো লাগত যখন দেখতাম ভাইয়া বিভিন্ন পুরস্কার পেতেন। তখনই খেলার প্রতি ইচ্ছা জাগে।
আমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকে আমার খেলার জীবন শুরু। যেকোনো খেলায় অংশগ্রহণ করলে আমি প্রথম হতাম। আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রথম স্থান হয়েছি দীর্ঘ লাফ এবং উচ্চ লাফে।
সে আরও বলে, আমাদের স্কুলের রানা স্যার আমাকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়ে যেতেন,আমার এ সফলতার পিছনে রানা স্যারের অবদান অপরিসীম, এ ছাড়া আমার ভাইও অনেক সাপোর্ট করেছে।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন দেশের বাইরে গিয়েও বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণপদক নিয়ে আসতে পারি।
সজলের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার বড় ভাই সজিবের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক সময় আমার স্বপ্ন ছিল অ্যাথলেট হবো। সেই আশায় বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু পরিবারের বিভিন্ন কাজ ও সমস্যার কারণে আমি সেটা হতে পারিনি। তারপর আমার স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করতে চাই আমার ছোট ভাইকে দিয়ে। সেই চেষ্টা থেকেই তাকে বিভিন্ন ধরনের অনুপ্রেরণামূলক পরামর্শ এবং কীভাবে ভালো করা যায় সেই চেষ্টা করেছি। তার ফল হিসেবে এখন সে স্বর্ণপদক পেয়েছে।
সজলের বাবা মো: রমজান আলী বলেন, আমার ছেলে অনেক ছোট মানুষ। কেবল ক্লাস সেভেনে পড়ে। যদি বড় হয় তাহলে আরও ভালো কিছু করতে পারবে বলে আশা করি। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমার ছেলের সজলের জন্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালান্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাসুদ রানা বলেন, আমাদের স্কুল থেকে এর আগে বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায় অনেকেই ভালো খেলেছে। আমাদের সজল এবার জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেছে। আমি চেষ্টা করেছি সজল যেন ভালো কিছু করতে পারে। তাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের এক দিন আগেই আমি ঢাকা গিয়ে সজলের সঙ্গে দেখা করি। বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও সাহস দেই। সজল আমাদের স্কুলের গর্ব, ঠাকুরগাঁও জেলার গর্ব। আমি আশা করি ভবিষ্যতে সে বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।