এস এম বেলাল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ অন্যান্য জেলার থেকে ঠাকুরগাঁও জেলায় সবার আগে শীত জেঁকে বসে। এবারও তার কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই জেলায় শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। এতে প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ।
এ কারণেই শীতার্তদের কষ্ট নিবারণে গভীর রাতে শীতবস্ত্র নিয়ে খেটে-খাওয়া মানুষের বাড়িতে কম্বল পৌঁছে দিচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে জেলার সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ, হরিহরপুর, শিমুলতলা ও রোড এলাকার মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও খেটে-খাওয়া মানুষের মাঝে পৌঁছে দেন শীতবস্ত্র।
মাদরাসা শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, কয়েকদিন থেকে খুব ঠান্ডা করছে৷ আমার আগের একটা কম্বল ছিল এখন ডিসি আপা আরেকটা দিল৷ এখন আর বেশি ঠান্ডা লাগবে না৷ মায়ের মতন আদর করে কম্বল মুড়িয়ে দিলেন তিনি। মনে হলো আমার মা আমাকে কম্বল মুড়ায় দিচ্ছেন৷ আমরা খুব খুশি হয়েছি ৷ ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব বানু৷ বাড়িতে গিয়ে আচমকাই কম্বল মুড়িয়ে দিলেন জেলা প্রশাসক। কম্বল পেয়ে খুশি তিনি। তিনি বলেন, মুই তো ঘুমাইছিনু। হুট করে ডিসি আপা আসে হেনে কম্বল দিল। ঠান্ডাত ভালো করে ঘুমবা পাড়ুনা। আইজাকা নয়া কম্বল দিল ভালো ঘুম হবে৷ আল্লাহ ডিসি আপার ভালো রাখুক। মাদারগঞ্জ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ফয়জুর রহমান বলেন, সবসময় পবিত্র অবস্থায় ছাত্রদের থাকতে হয়। সে কারণে ওযুর প্রয়োজনে অধিকাংশ সময় পানি নাড়তে হয়৷ আজকে সব ছাত্রদের ডিসি স্যার শীতবস্ত্র দিয়েছেন ৷ এতে তারা সেটা মুড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। পাশাপাশি রাতে মুড়িয়ে নিয়ে ঘুমাতে পারবে৷ ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশনে শুয়ে থাকা ছিন্নমূল বেশ কয়েকজন মানুষ শীতবস্ত্র পেয়ে বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় ঘুম আসছিল না, এমন সময় এসে জেলা ডিসি আপা কম্বল দিল। এখন রাতে একটু ভালো করে ঘুমবা পারমো।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, জেলায় শীতের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। শীতার্তদের কষ্ট লাঘবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। শীতে প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এসময় সদ্য বদলি হয়ে যাওয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলায়েত হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা সঙ্গে ছিলেন।