নাগরিক ভাবনা:লায়ন আ্যাড, আব্দুল মজিদ: উত্তরবঙ্গকে অবহেলা করার একটা সীমা থাকা উচিৎ। উত্তরবঙ্গের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে অবহেলা ও বৈশম্য নেই, বিশেষ করে রেলপথে। ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে ৩টি। আন্তঃনগর এক্সপ্রেস তিনটি ট্রেন হচ্ছে, একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন (৭০৫), দ্রুতযান আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন (৭৫৭) এবং পঞ্চগড় আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন (৭৯৩)।
একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি (৭০৫) ঢাকা থেকে ছাড়ে সকাল ১০:১৫ মিনিটে এবং পঞ্চগড়ে পৌঁছার কথা রাত ৯ টায়। এটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন হলেও ট্রেনটি থামে ২৩টি রেলওয়ে স্টেশনে।
স্টেশনগুলো হলো: ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, বঙ্গবন্ধু সেতু-পূর্ব, মনসুর আলী, উল্লাপাড়া, ঈশ্বরদী, নাটোর, শান্তাহার, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট, পাঁচবিবি, বিরামপুর, ফুলবাড়ি, পার্বতীপুর, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর, সেতাবগঞ্জ, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, রুহিয়া, কিসমত এবং পঞ্চগড়। দ্রুতযান আন্তঃনগর এক্সপ্রেস (৭৫৭) ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছাড়ে রাত ৮ টায় এবং পঞ্চগড়ে পৌঁছার কথা পরের দিন সকাল ৬:৪৫ মিনিটে। এটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন হলেও এটি পঞ্চগড়ের পৌঁছাতে পথিমধ্যে ২৩টি স্টেশনে থামে। স্টেশনগুলো হলো; ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, বঙ্গবন্ধু সেতু-পূর্ব, মনসুর আলী, উল্লাপাড়া, ঈশ্বরদী, নাটোর, শান্তাহার, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট, পাঁচবিবি, বিরামপুর, ফুলবাড়ি, পার্বতীপুর, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর, সেতাবগঞ্জ, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, রুহিয়া, কিসমত এবং পঞ্চগড়।
পঞ্চগড় আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি(৭৯৩) ঢাকা থেকে ছাড়ে রাত ১১:৩০ মিনিটে এবং পঞ্চগড়ে পৌঁছার কথা পরের দিন সকাল ৯:৫০ মিনিটে। ট্রেনটি পঞ্চগড় পর্যন্ত পৌঁছাতে মাঝে ৯ টি রেলস্টেশনে থামে। রেল স্টেশনগুলো হলো; ঢাকা বিমানবন্দর, নাটোর, শান্তাহার, জয়পুরহাট, পার্বতীপুর, দিনাজপুর, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড়।
পঞ্চগড় আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রা বিরতি ৯ টি রেল স্টেশনে। এটি মেনে নেওয়ার মতো। কিন্তু বাকি দু’টো আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতি ২৩টি রেল স্টেশনে, যা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। যদি ২৩ স্টেশনে থামাতেই হয় তাহলে ট্রেন দু’টির নাম আন্তনঃগর এক্সপ্রেস না রেখে নাম পরিবর্তন করে লোকাল ট্রেন বা অন্য কোনো নাম রাখার জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
যে ট্রেনটি ৯টি স্টেশনে থামবে সেটিও আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন আবার যেটি ২৩টি স্টেশনে থামবে, সেটির নাম আন্তনঃগর এক্সপ্রেস ট্রেন, এটি কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা খনার বচনের মতো “কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন” এর মতো মনে হচ্ছে। সাবেক রেলমন্ত্রীর দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারা তো রেলওয়ের হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান করে নিজেরা শত শত কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
ট্রেন পথে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের দূরত্ব ৫৮০ কিলোমিটার। এত দূরত্বের রেলপথে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনে এত বিলম্ব এবং কষ্ট কি যাত্রীদের মেনে নেওয়া সম্ভব? এটা কিন্তু সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বিবেচনা করেননি। তবে তিনি পঞ্চগড় রেল স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে তার ভাই “বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম” এর নামে নামকরণ করতে মোটেও বিলম্ব এবং ভুল করেননি।
আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টির স্টপেজের কথা শুনলে আশ্চর্য এবং হতবাগ না হয়ে কোনো উপায় নেই। পর পর কয়েকটি স্টপেজের কথা উল্লেখ করছি। জয়পুরহাট, আক্কেলপুর, পাঁচবিবি, বিরামপুর, ফুলবাড়ি এবং পার্বতীপুরে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টি থামে। অথচ একটি থেকে আর একটি স্টপেজের দূরত্ব কোনো অবস্থাতেই চর থেকে পাঁচ মাইলের বেশি নয়।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে অনেকগুলো রেলস্টেশন এবং জেলাশহর থাকা সত্বেও কোনো বিরতি ছাড়াই যদি ঢাকা-চট্রগ্রাম আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করতে পারে, তাহলে ঢাকা-পঞ্চগড় আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চার-পাঁচটি স্টপেজ দিলে অসুবিধাটা কোথায়?
বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান রেলমন্ত্রী মহোদয় রেলপথে ঢাকা-পঞ্চগড়ের ৫৮০ কিলোমিটার দূরত্বের কথা বিবেচনা করে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টির স্টপেজ কমিয়ে চার থেকে পাঁচটি স্টপেজ করার দাবিটি পূরণ করে অবহেলিত উত্তরবঙ্গের জনগণের হৃদয়ে আপনি ভালোবাসার পাত্র হয়ে থাকার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ করছি।