ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কার ও নির্বাচনের কথা বলছেন তা বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে অনেক কিছুর মিল আছে। সে কারণে ৩১ দফার উপরে আর কোন সংস্কার নাই। আর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে এ বাংলাদেশের মাটিতে আবার ফ্যাসিবাদ আসতে পারবে না বলে দৃঢ় বিশ্বাস করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল ) বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ে ইএসডিও’র জয়নাল আবেদীন মিলনায়তনে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কার ও নির্বাচনের কথা বলছেন তা বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে অনেক কিছুর মিল আছে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে ও এটাকে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সবার আন্তরিকতা সহযোগিতার মধ্যে দিয়ে এবং সকল রাজনৈতিক দল মত একত্রিত করে এই অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলে এই বাংলাদেশের মাটিতে আবার ফ্যাসিবাদ আসতে পারবে না বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, একদিকে আন্দোলন চলছে আরেকদিকে ২৭ দফা ভিত্তিক কাজ গুলো আমরা করে যাচ্ছি। এক পর্যায়ে ২৭ দফা ৩১ দফায় উন্নীত হয়। ফ্যাসিবাদ বিরোধী যে আন্দোলন ছিল সে আন্দোলনে আমরা যারা অন্যান্য রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিল। তাদের সবার আলাপ আলোচনার প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১ দফা ঘোষণা করি। তারেক রহমানের চিন্তা চেতনা সকল দল মতকে একত্রিত করার ও অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার সেটি ৩১ দফার মধ্যে ধীরে ধীরে সম্ভব হয়ে উঠেছিল এবং আন্দোলন বেগবান হয়েছিল। সেই আন্দোলনটি এক দফার ভিত্তিতে শেখ হাসিনার পদত্যাগ হয়েছে।
সবাইকে সজাগ ও দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে ৩১ দফা শুরু করলেও আমরা জনগণের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি। তাই আজকে সময় ও সুযোগ এসেছে। বাস্তবভিত্তিক এই ৩১ দফা পয়েন্ট ও বিষয় ভিত্তিক আপনাদের তুলে ধরতে হবে। কর্মশালায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে দ্বিতীয় অধিবেশনে তিনি বলেন, এটাই সময় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার। এটা সময় ঐক্যের। এই সময়টা বিভেদের নয়। তাই দলীয় ও সমমনা দলগুলোর ঐক্যের উপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
তারেক রহমান আরো বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এখন দল মত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রয়োজন প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে সংক্ষিপ্ত ও জরুরি সংস্কার ও দ্রুততম নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য ও সহমত হওয়ার বিকল্প নেই। বিপদগামী ও শৃঙ্খলাবিহীন দলীয় নেতাকর্মীদের হুসিয়ারি দিয়ে তারেক রহমান আরো বলেন, চাঁদাবাজি বা ধান্দা বাজি করে টাকার মালিক হওয়া গেলেও দলে দায়িত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ পদ আর পাওয়া যাবে নাহ। শুধু সৎ, যোগ্য, দক্ষ এবং ত্যাগীদেরই আগামীর বিএনপির নেতৃত্বে আনা হবে। সে বিষয়ে কোন সন্দেহ ও সংশয় নেই। তাই যারা দলের নাম ভাংগিয়ে অপকর্মে যুক্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারসহ কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুসিয়ারি দেন তিনি।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্মসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্র সংসদের ভিপি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, দপ্তর সম্পাদক মামুন অর রশিদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন তুহিন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারিক আদনান প্রমুখ। কর্মশালায় কেন্দ্রীয় বিএনপির বিভিন্ন নেতাসহ জেলা, উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।